২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে মোট ১২ দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ছুটি সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মিলে গেছে। জাতীয় দিবস এবং ধর্মীয় উৎসবের জন্য ১৫ দিন সাধারণ ছুটি এবং বাংলা নববর্ষসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ্যে নির্বাহী আদেশে আরও ১২ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এমন ছুটির সুযোগ কাজে লাগিয়ে নতুন বছরে ভ্রমণের পরিকল্পনা সাজিয়ে নিতে পারেন। ব্যস্ত জীবনের চাপ থেকে মুক্তি পেতে প্রিয়জনদের নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন নতুন কোনো গন্তব্যের পথে। ভ্রমণের প্রতিটি মুহূর্তকে পরিণত করুন বছরের সেরা স্মৃতিতে।
এখনই আপনার ছুটির দিনগুলোকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা শুরু করুন। কোথায় যাবেন, কীভাবে সময় কাটাবেন—সব ঠিকঠাক করে রাখুন। ২০২৫ সালের প্রতিটি ছুটি হোক আপনার জীবনের নতুন অভিজ্ঞতা আর আনন্দে ভরা অধ্যায়।
২০২৫ সালে সরকারি ছুটির পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য নির্ধারিত ঐচ্ছিক ছুটির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যা তাদের ধর্মীয় উৎসব ও আচার-অনুষ্ঠান পালনকে আরও অর্থবহ করে তুলবে। মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য ৫ দিন, হিন্দুদের জন্য ৯ দিন, খ্রিস্টানদের জন্য ৮ দিন, এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য ৭ দিনের ঐচ্ছিক ছুটি নির্ধারিত হয়েছে। এছাড়াও, পার্বত্য অঞ্চলের নৃগোষ্ঠীগুলোর জন্য রয়েছে ২ দিনের বিশেষ ঐচ্ছিক ছুটি।
এই ছুটিগুলো শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনেই নয়, পরিবার ও প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দময় সময় কাটানোর জন্যও এক অনন্য সুযোগ। ব্যস্ত জীবনের মাঝে নিজের বিশ্বাস, সংস্কৃতি এবং প্রিয়জনদের প্রতি মনোযোগ দিতে এই দিনগুলোকে উপভোগ করুন, যা আপনার জীবনে স্মরণীয় মুহূর্ত যোগ করবে।
২০২৪ সালের সাধারণ
২০২৫ সালের সাধারণ ছুটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে দেশের জাতীয় ও ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো। বছরের শুরুতেই ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করা হবে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। স্বাধীনতার গৌরবময় স্মৃতি ধারণ করে ২৬ মার্চ থাকবে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ছুটি।
ধর্মীয় উৎসবগুলোর মধ্যে ২৮ মার্চ জুমাতুল বিদা এবং ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে। এছাড়া, ৭ জুন ঈদুল আজহা, ৫ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), ২১ মে বুদ্ধপূর্ণিমা, ২ অক্টোবর দুর্গাপূজা (বিজয়া দশমী), ও ১৬ আগস্ট জন্মাষ্টমীর দিন ছুটি নির্ধারিত রয়েছে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্ববাহী দিনগুলোর মধ্যে ১ মে রয়েছে শ্রমিকদের অধিকারকে সম্মান জানাতে মে দিবস। বছরের শেষে, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং ২৫ ডিসেম্বর যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন (বড়দিন) উদযাপনের মাধ্যমে ছুটির তালিকা পূর্ণ হবে।
এই বিশেষ দিনগুলো আপনাকে প্রিয়জনদের সঙ্গে কাটানোর সুযোগ করে দেবে, আর উৎসবের আবহে নতুন অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ করবে জীবনকে।
নির্বাহী আদেশে ছুটির তালিকা
২০২৫ সালে নির্বাহী আদেশে বেশ কয়েকটি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি শবে বরাত, ২৮ মার্চ শবে কদর, ঈদুল ফিতরের আগে ২ দিন (২৯-৩০ মার্চ) ও পরে ২ দিন (১-২ এপ্রিল) মোট ৪ দিন, ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ, ঈদুল আজহার আগে ২ দিন (৫-৬ জুন) ও পরে ৩ দিন (৮-১০ জুন) মোট ৫ দিন, ৬ জুলাই আশুরা, এবং ১ অক্টোবর দুর্গাপূজার মহানবমী। এসব ছুটি কাজে লাগিয়ে প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং বিশেষ দিনগুলো উদযাপনের পরিকল্পনা করতে পারেন।
মুসলমানদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটি
মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য ২০২৫ সালের ঐচ্ছিক ছুটির তালিকায় রয়েছে: ২৮ ফেব্রুয়ারি শবে মিরাজ, ৩ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের তৃতীয় দিন, ১১ জুন ঈদুল আজহার চতুর্থ দিন, ২০ সেপ্টেম্বর আখেরি চাহার শোম্বা এবং ৪ অক্টোবর ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম। এই বিশেষ দিনগুলো উদযাপনের জন্য সময় বের করে ধর্মীয় আচার পালনের পাশাপাশি প্রিয়জনদের সঙ্গে কাটাতে পারেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটি
২০২৫ সালে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির দিনগুলো হলো: ৩ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পূজা, ২৬ ফেব্রুয়ারি শিবরাত্রি ব্রত, ১৪ মার্চ দোলযাত্রা, ২৭ মার্চ হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব, ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়া, ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর দুর্গাপূজার সপ্তমী ও অষ্টমী, ৬ অক্টোবর লক্ষ্মীপূজা এবং ৩১ অক্টোবর শ্যামাপূজা। ধর্মীয় এই বিশেষ দিনগুলো উৎসবের আনন্দে ভরিয়ে তুলুন প্রার্থনা ও পারিবারিক সময় কাটানোর মাধ্যমে।
খ্রিস্টানদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটি
২০২৫ সালে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির দিনগুলো হলো: ১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষ, ৫ মার্চ ভস্ম বুধবার, ১৭ এপ্রিল পুণ্য বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল পুণ্য শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল পুণ্য শনিবার, ২০ এপ্রিল ইস্টার সানডে এবং ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর যিশুখ্রিষ্টের জন্মোৎসব উপলক্ষে বড়দিনের আগে ও পরের দিন। এই বিশেষ দিনগুলোতেও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রার্থনা ও পারিবারিক আনন্দ উদযাপন করা যায়।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটি
২০২৫ সালে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির দিনগুলো হলো: ১১ ফেব্রুয়ারি মাঘী পূর্ণিমা, ১৩ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তি, ১০ ও ১২ মে বুদ্ধপূর্ণিমার পূর্ব ও পরের দিন, ৯ জুলাই আষাঢ়ী পূর্ণিমা, ৬ সেপ্টেম্বর মধু পূর্ণিমা এবং ৫ অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমা। এই দিনগুলো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্য তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব উদযাপনের বিশেষ সময় হিসেবে নির্ধারিত।
পার্বত্য নৃগোষ্ঠীর জন্য ঐচ্ছিক ছুটি.
২০২৫ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা ও এর বাইরে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কর্মচারীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির দিনগুলো হলো ১২ ও ১৫ এপ্রিল বৈসাবি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর অনুরূপ সামাজিক উৎসব। এই দিনগুলো এসব সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় উদযাপনকে সম্মান জানাতে ছুটির দিন হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে।